ভোটের আগেই রাজ্য সরকার এক দারুন উপহার দিলেন সরকারি কর্মীদের। খুব শীঘ্রই চালু হবে সপ্তম পে কমিশন বা 7th Pay Commission. আমরা সকলেই জানি যে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সাথে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বা DA এর অনেক তফাত আছে। আর বেতনের তফাতটা আরও অনেকটাই বেশি। এই নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অনেক লড়াই করে চলেছে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। তাতে যদিও তাদের DA কিছুটা বাড়ানো হয়েছিল। আমাদের রাজ্যে এখনও অবধি ষষ্ঠ বেতন কমিশন বা 6th Pay Commission চালু আছে। তবে এরই মধ্যে চালু হতে চলেছে সপ্তম পে কমিশন।
7th Pay Commission Latest Update
এবার এক ধাক্কায় অনেকটাই বেতন বাড়বে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। খুব শীঘ্রই ২৪ এর লোকসভা নির্বাচন শুরু হতে চলেছে হাতে গোনা মাত্র আর কিছু দিন রয়েছে। তাই রাজ্যে খুব তাড়াতাড়ি চালু হতে পারে 7th Pay Commission. এ নিয়ে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের স্বার্থপূরণে দায়বদ্ধ সরকার। তাই এই সুযোগে সরকার সুখবর দিতে পারে রাজ্য কর্মীদের। চলুন দেখে নেওয়া যাক এ সম্পর্কে সরকার কি বলতে চাইছে।
সাধারণত মূল্যদ্রব্যের দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কেন্দ্রীয় সরকার DA বাড়াচ্ছে তার কর্মীদের। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যে চালু রয়েছে 6th Pay Commission, আবার এর অপর দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি জীবিদের চালু হতে চলেছে সপ্তম পে কমিশন বা 7th Pay Commission এই অনুযায়ী বেতন বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্যের মাসিক বেতন বৃদ্ধি বা DA দেওয়া নিয়ে দিনের পর দিন সমস্যার মুখমুখি হতে হচ্ছে রাজ্য চাকরিজীবি দের। এই নিয়ে কর্মীরা বারংবার তুমুল বিক্ষোভ জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে।
প্রথম প্রথম সরকার এ বিষয় কোনো রকম দাবি না শুনলেও অবশেষে দাবি মানতে বাধ্য হয় আর ২০২২ সালে নতুন করে বেতন কনিশনের কাজ চালু করার পরামর্শ দেয় কর্নাটকের রাজ্য সরকার। তাই নতুন Pay Commission বা বেতন কমিশন লাগু করে বেতন বৃদ্ধির জন্য দাবি করে রাজ্য সরকারি কর্মীরা রাজ্য সরকারের কাছে। কিন্তু এরপর সরকার কি করবে ? নতুন করে বেতন কমিশন কি চালু হবে ?
কর্নাটক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার নির্দেশে প্রাক্তন সরকারি আমলা সুধাকর রাওয়ের নেতৃত্বে সেই Pay Commission বা বেতন কমিশন গঠিত হয়েছিল। তিনি কথা দিয়েছিলেন যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে তিনি ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মাসে বেতন কমিশনের রিপোর্ট পেশ করবেন। কিন্তু পরবর্তী সময় কাজ শেষ না হওয়ার কারনে রিপোর্ট পেশ করা যায়নি সেটিকে স্থগিত রাখা হয় তখন। তবে পরে এই সময়সীমা আরও বাড়িয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যেই সেই রিপোর্ট টি পেশ করা হবে বলে জানানো হয়।
প্রতিবছরেই ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যেই রাজ্যের বাজেট পেশ করা হয়। আর তাই এ বছরের বাজেট পেশ করবার সময়েই কর্মীরা আশা করেছিলেন যে তারা নতুন Pay Commission বা বেতন কমিশন নিয়ে হয়তো কিছু সুখবর আসতে পারে। কিন্তু তাতেও কিছু সুফল হয় না দ্বিতীয় দফাও স্থগিত করে দেওয়া হয় এতে কর্মীরা খুবই নিরাশ হয়ে পরে।
এদিকে মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিকে ২৪ এর এই নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে চলেছে। আবার সামনেই লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। লোকসভা নির্বাচন পেরোলেই আবার কর্ণাটক রাজ্যে আটটি আসনে হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন। এরপরেই শুরু হবে বেঙ্গালুরু পুরনিগমের নির্বাচন। তবে মার্চ মাস যেতে যেতে পুর সময়টা ভোটে ভোটেই কাটবে বলে মনে হয়।
তবে সপ্তম বেতন কমিশন বা 7th Pay Commission এটি যদি মার্চ মাসের মধ্যে লাগু করার সিদ্ধান্ত রাজ্য না নেয়, তা হলে অনেক টাই দেরি হয়ে যাবে, এই ধারনা করছেন রাজ্য কর্মীরা। তারা মনে করছেন নির্বাচন মিটে গেলে সরকারের দৃষ্টিপাত ঘটার সম্ভাবনা অনেক টাই কমে যাবে বলে মনে করেছেন তারা।
উল্লেখ্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিধানসভায় ২০২৪-২৫ অর্থের বাজেট পেশ করেন। আর এই বাজেটে তিনি জানান যে রাজ্য সরকারের কর্মী ও পেনশনভোগীদের জন্য চলতি অর্থবছরের বেতন কতটা বৃদ্ধি করা হবে। বাজেট সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবার বেতন এবং পেনশনের বরাদ্দ ২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বাজেটে ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ পেশ করা হয়েছে এবং কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে,যদি মনে হয় আরও অনুদানের প্রয়োজন আছে তবে সেটাও দেওয়া হবে। রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বেতন এবং পেনশনের জন্য ২০২৪-২৫ এই অর্থবর্ষে অনুমান করা হচ্ছে যে প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা খরচ হতে পারে 7th Pay Commission সুপারিশ অনুসারে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট বোঝা যায় যে কমিশনের কাজ এখনো পুরোপুরি ভাবে শেষ হয়নি। তাই এর থেকে এটি বোঝা দায় যে এবার থেকে 7th Pay Commission সপ্তম বেতন কমিশন চালু হওয়ার সম্ভবনা আছে নাকি। তাই নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী সপ্তম বেতন কমিশন বা 7th Pay Commission এখন দেওয়া চালু হয়নি রাজ্য়ের সরকারি কর্মীদের। তাহলে আর কত আপেক্ষা করতে হবে বলে মনে হয় এই সুবিধা পাওয়ার জন্য, সে সম্পর্কে এখনো কিছুই জানায়নি রাজ্য।