Best Homemade Remedyfor Natural Shampoo
“প্রাকৃতিক শ্যাম্পু তথা Natural Shampoo বনাম বাজারের শ্যাম্পু” কোনটি সত্যিই ভালো? কোনটি ব্যবহার করলে সত্যি আমরা উপকার পাবো? এই চিন্তা আমাদের মাথায় সব সময় ঘুরে বেড়ায়। এছাড়াও চুল কীভাবে আরও ঘন, সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর করা যায়, ব্রণ কমানোর জন্য কোন মাস্ক সবচেয়ে কার্যকর? এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সমাজমাধ্যমে এখন নানা্ন ধরনের টোটকার ছড়াছড়ি। কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন, পছন্দের শ্যাম্পুর সঙ্গে বিশেষ উপাদান মিশিয়ে ব্যবহার করুন। কেউ বলছেন, তিনটি নির্দিষ্ট উপাদান ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে নিলেই হবে। আবার কারও কারও মতে, বাজারচলতি শ্যাম্পুর প্রয়োজনই নেই—রান্নাঘরের সাধারণ উপকরণেই চুল হবে ঘন, মজবুত ও উজ্জ্বল।
যতদিন যাচ্ছে চুলের ও ত্বকের যত্ন নিয়ে নানা ধরনের টোটকা সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে, আর তারই মধ্যে একটি বিশেষ উপায় বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বলা হচ্ছে, সাধারণ শ্যাম্পুর পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে প্রাকৃতিক শ্যাম্পু তথা Natural Shampoo. বেসন, মধু, নারকেল তেল এবং জলের মিশ্রণ ব্যবহার করলে মাথার ত্বক হবে সম্পূর্ণ পরিষ্কার, চুল থাকবে নরম ও মসৃণ, এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতাও ফিরে আসবে।
পিরিয়ড বন্ধ হলে কোলেস্টেরল ও হার্টের ঝুঁকি বেড়ে যায়? দেখা দিতে পারে আরও শারীরিক সমস্যা
এক স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এই প্রাকৃতিক শ্যাম্পু তথা Natural Shampoo বানানোর কৌশল অনুসরণ করে সেটি ব্যবহার করে জানিয়েছেন যে, তাঁর মাথার ত্বক খুব ভালোভাবে পরিষ্কার হয়েছে এবং চুল তুলনামূলকভাবে হালকা ও প্রাণবন্ত মনে হয়েছে। তবে তিনি লক্ষ করেছেন যে চুল একটু শুষ্ক হয়ে গিয়েছে, তাই চুলের মসৃণতা বজায় রাখতে কন্ডিশনার ব্যবহার করেছেন।
সত্যিই কি বেসন, মধু ও নারকেল তেলের সংমিশ্রণে চুল আরও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে?
অনেকেই এই প্রাকৃতিক শ্যাম্পু তথা Natural Shampoo টির প্রশংসা করলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এর কার্যকারিতা সম্পূর্ণ নির্ভর করে চুলের ধরন ও প্রয়োজনের ওপর। ত্বক ও চুলের যত্ন বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক করুণা মালহোত্রা জানান, “এই তিনটি উপাদান স্বাভাবিকভাবেই চুলের জন্য উপকারী, তবে চুলের গঠন ও ধরন বুঝে তবেই এর আসল প্রভাব বোঝা যাবে। সবার ক্ষেত্রে একইভাবে কাজ নাও করতে পারে।”
বেসন একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার, যা মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে এবং অতিরিক্ত তেল ও ময়লা অপসারণ করে। মধু চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে রুক্ষ ও শুষ্ক চুলের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। অন্যদিকে, নারকেল তেল চুলের গভীরে পুষ্টি জোগায়, চুলকে মসৃণ, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই উপাদানগুলোর প্রভাব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তাই যেকোনো নতুন পদ্ধতি অবলম্বনের আগে চুলের ধরন ও প্রয়োজন বুঝে নেওয়া জরুরি।
তবে করুণা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, একই ফর্মুলা সবার জন্য সমানভাবে কার্যকর নাও হতে পারে। চুল ও মাথার ত্বকের ধরন অনুযায়ী এই উপাদানগুলোর প্রভাব ভিন্ন হতে পারে। বিশেষ করে, যাদের মাথার ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তাদের জন্য মধু ও নারকেল তেলের যুগ্ম ব্যবহার খুব একটা সুবিধাজনক নাও হতে পারে। নারকেল তেলের পরিমাণ বেশি হলে এটি মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল জমিয়ে ফেলতে পারে, যা চুল দ্রুত চিটচিটে করে তুলতে পারে এবং খুশকির সমস্যাও বাড়াতে পারে।
খারাপ কোলেস্টেরল বাসা বেঁধেছে শরীরে? ঘরোয়া টোটকাতেই মিলবে সমাধান! এই 4টি বীজ সমৃদ্ধ খাবার খান।
অন্যদিকে, বেসন প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করলেও এটি ত্বক ও চুল কিছুটা রুক্ষ করে দিতে পারে। ফলে যাদের ত্বক এবং চুল স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক, তাদের জন্য এটি আরও বেশি শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে বেসন ব্যবহারের সময় তেলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত, যাতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে। অপরদিকে, যাদের চুল খুব তৈলাক্ত, তাদের ক্ষেত্রে তেলের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভালো।
অতএব, এই প্রাকৃতিক শ্যাম্পু তথা Natural Shampoo বানানোর উপকরণগুলি ব্যবহার করার আগে নিজের চুলের ধরন বুঝে সঠিক পরিমাণ ঠিক করাটা অত্যন্ত জরুরি, অর্থাৎ আপনার চুলের জন্য যতটুকু পরিমাণ মিশ্রণ প্রয়োজন ঠিক ততটাই ব্যবহার করুন না হলে প্রত্যাশিত ফল না-ও মিলতে পারে। আবার এই মিশ্রণ বেশি বা কম হলে উল্টো সমস্যা দেখা দিতে পারে।