রাজ্যের একটি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ (Teacher Recruitment) বিজ্ঞপ্তি নিয়ে শুরু হল বিতর্ক। বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়েছে বীরভূমের একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের তরফে। এই স্কুলে দুটি বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ চলছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল দুটি পদের জন্যই বিনামূল্যে শিক্ষক নিয়োগের বার্তা দেওয়া হয়েছে স্কুলের তরফে। আর এই বিজ্ঞপ্তি আলোচনার কারণ হয়েছে। স্কুলের শিক্ষকতার জন্য স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক কেন! যাকে নিয়োগ করা হবে, তাকে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে ক্রমে জলখোলা চলছে।
Teacher Recruitment In Birbhum
সংশ্লিষ্ট ঘটনাটি বীরভূমের রাজনগর হাই স্কুলের ঘটনা। সম্প্রতি এই স্কুলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি (Teacher Recruitment) জারি করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে বীরভূমের এই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলটিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান তথা পলিটিক্যাল সায়েন্স এবং শিক্ষা তথা এডুকেশন বিষয়ে পড়াশোনা করানোর জন্য শিক্ষক অভাব দেখা দিচ্ছে।
দুটি বিষয়ে পড়াশোনার অনুমোদন থাকলেও শিক্ষকের অভাব রয়েছে স্কুলটিতে। আর সেই কারণে ছাত্রছাত্রীরা চাইলেও সংশ্লিষ্ট বিষয় দুটি নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন না। বীরভূমের রাজনগর হাই স্কুলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই দুটি বিষয়ের পঠনপাঠন।
স্কুলের তরফে চাওয়া হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দুটি বিষয়ের ফের পড়াশোনা শুরু হোক। তবে সেটি চাইলে প্রয়োজন শিক্ষকের। এমতবস্থায় স্কুলটির তরফে নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করা হয়েছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও শিক্ষা বিষয়ে পড়ানোর জন্য স্কুলে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ (Teacher Recruitment) হবে।
তবে সেই শিক্ষককে হতে হবে স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক। যিনি স্বেচ্ছায় পড়াবেন, কিন্তু কোন পারিশ্রমিক দাবি করবেন না। বিদ্যালয়ের তরফে দুটি পদের জন্যই নিযুক্ত শিক্ষকদের কোন মাসিক পারিশ্রমিক দেওয়া হবে না। বিদ্যালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই তুমুল বিতর্ক শুরু হল।
সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পঠনপাঠনের অনুমোদন পেয়েছিল রাজ্যের
রাজনগর হাই স্কুল। বর্তমানে এই স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী মিলিয়ে ৩৭০ জন পড়ুয়া রয়েছে। এই বিদ্যালয় অনুমোদন পাওয়ার সময় যে যে বিষয়ের অনুমোদন পেয়েছিল।
সে সময় সেই সমস্ত বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন স্কুলে। তবে ২০২২ সালে অবসর গ্রহণ করেন স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক। স্কুলটিতে শিক্ষা বা এডুকেশন বিষয়ে পড়ানোর জন্য ছিলেন ইতিহাসের একজন শিক্ষক। কারণ সেই শিক্ষকের এডুকেশন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছিল।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা বিষয়টি তাঁর হাতেই অর্পণ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অবসর নেন তিনিও। দুই শিক্ষকের অবসরের পর বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং এডুকেশন বিষয় দুটির পঠনপাঠন একেবারে বন্ধ।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়াদের চাহিদার কারণে বিষয় দুটিতে পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়েছে। তবে গত দুই বছর ধরেই বিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয় দুটির কোনো পঠনপাঠন হয়নি। বরং আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীরা গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশোনা।
চলতি বছরেও বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট বিষয় দুটিতে পড়াশোনা করবে বলে রেজিস্ট্রেশন করায়।
বিদ্যালয় যাতে সংশ্লিষ্ট বিষয় দুটির পড়াশোনা চালু হয়, তার জন্য বিদ্যালয়ের তরফে জারি করা হয়
বিজ্ঞপ্তি (Teacher Recruitment)। কিন্তু সেই বিজ্ঞপ্তিতেই বিতর্ক।
বিনামূল্যে শিক্ষক (Teacher Recruitment) চাই! বিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি দেখে অনেকেই বলছেন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার করুন অবস্থা উঠে আসছে বিজ্ঞপ্তিটির মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য তুলেছেন বিরোধীরাও, ঘটনাটিতে রাজ্য সরকার কেই দুষছেন তাঁরা। অন্যদিকে, তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠনের দাবি, ভুল করে বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়েছে। অতি শীঘ্রই ভুল শুধরে নেওয়া হবে।
Written By Purbasha Chakraborty