শুক্রবারের ভয়াবহ Earthquake বা ভূমিকম্পে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গুঁড়িয়ে যায় ব্যাঙ্ককের নির্মীয়মাণ ৩০ তলা বিশাল বহুতল। এই বিশাল ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দমকল ও উদ্ধারকারী দলকে। এখনও বহু মানুষ ওই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন, যাঁদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।
Earthquake’s Effects in Bangkok
ব্যাঙ্ককে ভয়াবহ Earthquake বা ভূমিকম্পে ভেঙে পড়া ৩০ তলা নির্মীয়মাণ বহুতল ভবনের ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকা বেশিরভাগ মানুষেরই হয়তো মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে— এমনই আশঙ্কা করছে ব্যাঙ্কক পুলিশ। গত শুক্রবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ধূলিসাৎ যায় থাইল্যান্ডের রাজধানীর এই বিশাল বহুতলটি।
ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে রাতদিন এক করে। তবে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও অন্তত ৫০ জন জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে অনুমান। উদ্ধারের চেষ্টায় দিনরাত এক করে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা, সময় যত গড়িয়ে যাচ্ছে, তাঁদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হয়ে আসছে।
রবিবার দুপুরে ব্যাঙ্কক পুলিশের তরফে সেই আশঙ্কাই প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, এখন জীবিত কারও সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা এক শতাংশেরও কম। শুক্রবার যখন প্রবল Earthquake বা ভূমিকম্পে ব্যাঙ্ককের ওই নির্মীয়মাণ ৩০ তলা ভবনটি মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ে, তখন শতাধিক মানুষ সেখানে কর্মরত ছিলেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
ভবনটি ধসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা, আর ধুলো ও ধ্বংসস্তূপে ঢেকে যায় গোটা অঞ্চল। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সেই মর্মান্তিক ঘটনার সময় বহু নির্মাণকর্মী দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু অনেকেই আর বেরিয়ে আসতে পারেননি।
ভবন ধসের মুহূর্তেই ১০ জনের করুণ মৃত্যু হয়। রবিবার সকালে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি জানায়, থাইল্যান্ডে ওই Earthquake বা ভূমিকম্প দুর্ঘটনার পরে মোট ১৭ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া, গুরুতর আহত অবস্থায় ৩২ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তবে তখনও ৮৩ জনের কোনও খোঁজ মেলেনি, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই নির্মাণকাজে নিযুক্ত শ্রমিক বলে মনে করা হচ্ছে। পরে রবিবার দুপুরে নতুন তথ্য সামনে আসে, যেখানে জানা যায় অন্তত ৫০ জন এখনও বিশাল ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন।
উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের গভীরে চাপা পড়া মানুষদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা দ্রুত কমে আসছে, কারণ দীর্ঘ সময় ধরে তারা অক্সিজেন ও খাবার-পানীয়ের অভাবে মৃত্যুর মুখে পড়তে পারেন। ব্যাঙ্ককের ডেপুটি গভর্নর তাইডা কামোলভেজ অবশ্য এখনও আশার আলো দেখছেন এবং উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতি জোর দিচ্ছেন।
Henna বা মেহেন্দি ব্যবহারে ঝুঁকি! ত্বক ও চুলের ক্ষতি এড়াবেন কীভাবে?
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, বিশাল ধ্বংসস্তূপের কারণে উদ্ধারকাজ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ৩০ তলা বিশাল ভবনটি ধসে পড়ার ফলে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ কংক্রিট, লোহার কাঠামো এবং নির্মাণ সামগ্রী জড়ো হয়ে গেছে, যার কারণে উদ্ধারকারী দল সহজেই ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না।
তবে সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও উদ্ধারকারী দল নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ধ্বংসস্তূপের গভীরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আটকে পড়াদের সন্ধান চালানো হচ্ছে, আর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্ধারকর্মীরা সম্ভাব্য বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন।
ব্যাঙ্ককের ডেপুটি গভর্নর দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ‘‘আমি এখনও আশাবাদী। আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’’ গত শুক্রবার মায়ানমারে ঘটে যাওয়া শক্তিশালী Earthquake বা ভূমিকম্পের ভয়াবহ প্রভাব পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডেও অনুভূত হয়।
বিশেষ করে দেশটির রাজধানী ব্যাঙ্ককে এই Earthquake বা ভূমিকম্প ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে ব্যাঙ্ককের বাইরে এখনও পর্যন্ত প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি, যা কিছুটা স্বস্তির বিষয় বলে মনে করা হচ্ছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পি শিনাওয়াত্রা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুক্রবারই এক জরুরি বৈঠক করেন।
ব্লাড সুগার কমাতে চান?তবে ‘অব্যর্থ’ ওষুধ জেনে নিন! সকাল, বিকেল খেলেই কাজ হবে ম্যাজিকের মত
সেই বৈঠকে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ব্যাঙ্ককের নির্মীয়মাণ ৩০ তলা ভবন ধসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন বিপর্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, এবং রাজধানীর বাইরে দেশের অন্যান্য অঞ্চল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। তবে ভূমিকম্পের ফলে রাজধানী জুড়ে বিপুল সংখ্যক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর সূত্র অনুযায়ী, ব্যাঙ্ককের প্রায় দুই হাজার ভবনে কমবেশি ফাটল দেখা গেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাঙ্ককের অন্তত ৭০০টি ভবন বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে, যাতে কোনও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া যায়।